রত্ন ধারণে কি সন্তান ধারণ আদৌ সম্ভব By Astro Consultant in Kolkata
May 9, 2022
রত্ন ধারণে কি সন্তান ধারণ আদৌ সম্ভব By Astro Consultant in Kolkata
রত্ন ধারণের গুণকে অস্বীকার করা যায় না। বহু পুরা কাল থেকেই রত্নের প্রচলন এবং তার গুণাগুণ নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম মতামত পোষণ করেন। সঠিক যত্ন এবং সঠিক বিচার দ্বারা বিভিন্ন রকম বাধা দূর করা সম্ভব হয়ে থাকে। এই বাধা বা জটিল সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে খুব ভালো করে বিচার করে দেখা দরকার যে রত্ন ধারণ করতে যাচ্ছেন সেটি তার ওই বাধাকে কতটা দূর করতে পারে। সেটা আদৌ পুরোপুরি বাধা কাটাতে পারে না আংশিক বা ওই রত্ন ধারণ তার পক্ষে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
সন্তানের যোগ, রত্ন ধারণের আগে কোন জন্ম ছকের সেই যোগ কতটা ফলপ্রসূ তা আগে বিচার করা প্রয়োজন । কোন জন্ম ছকে পঞ্চম স্থান যা সন্তানের ঘর হিসেবে চিহ্নিত সেটি ফলদায়ীতে(Fruitful sign) আছে না সেটি বন্ধা রাশিতে (Barren sign) আছে কিনা দেখতে হবে। ফলোদায়ী রাশি হল কর্কট , বৃশ্চিক এবং মীন রাশি এবং বৃষ, তুলা এবং ধনু রাশি কে বলা হয় semi fruitful রাশি।
পঞ্চম ভাব এর সঙ্গে দ্বিতীয় এবং একাদশ ভাব যুক্ত হলে সন্তান নির্দেশ করে কারণ দ্বিতীয় ভাব পরিবারকে নির্দেশ করে অর্থাৎ পরিবারে একজন নতুন মেম্বার যুক্ত হওয়া আর একাদশ ভাব নির্দেশ করে সাফল্য বা প্রাপ্তি। সেইহেতু যদি পঞ্চম এবং একাদশ ভাব বা এদের অধিপতিরা এই ফলদায়ী রাশিতে আসীন হন তবে সন্তান লাভের ব্যাপারে ইঙ্গিত প্রদান করে।
আবার মেষ, মিথুন, সিংহ এবং কন্যা রাশি গুলিকে বন্ধ রাশি বলা হয় ।যদি পঞ্চম এবং একাদশ ভাবটি বন্ধা রাশিতে পড়ে এবং এদের অধিপতিরা যদি ফালোদায়ী রাশিতে না থাকে বা চন্দ্র ,লগ্ন এবং লগ্নপতি যদি ফলোদয়ী রাশিতে না থাকে এবং পঞ্চম ও একাদশ ভাবে যদি কোন ফলোদায়ী গ্রহ না থাকে তবে তা নির্দেশ করে নিঃসন্তান।
এবার গ্রহদের কথায় আসা যাক। গ্রহদের মধ্যে শুক্র ও বৃহস্পতি সন্তান ধারণের সবথেকে উত্তম কারক গ্রহ ।এছাড়া চন্দ্র ও মঙ্গলকেও সন্তানের কারক গ্রহ হিসেবে বলা যায়। কিন্তু যে গ্রহ গুলি সন্তান ধারণের বিমুখ গ্রহ সেটি হলো রবি ,বুধ ও শনি। কেতুও সন্তান সৃষ্টিতে বাধা ও প্রসবে বাধা তৈরি করে। পঞ্চম ভাব বা লগ্নভাবের সঙ্গে এইসব গ্রহগুলি যে যে রকম ভাবে যুক্ত হবে জাতক-জাতিকার সন্তান ধারণের ক্ষমতা সেই সেই রকমভাবে প্রতিফলিত হবে।
শুক্র ও চন্দ্র ভ্রন সৃষ্টিতে সাহায্য করে এবং বৃহস্পতি সন্তানের ধারক গ্রহ। অর্থাৎ দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুক্র, চন্দ্র এবং বৃহস্পতিকে শক্তিশালী করলে সন্তান ধারণের ক্ষমতা তৈরি হয় এবং সুস্থ সন্তান লাভ করে। এখানে বলা বাহুল্য হীরে বা জারকন শুক্র এর রত্ন বা উপরত্ন , মুক্ত বা মুনস্টোন চন্দ্রের আর বৃহস্পতির রত্ন পোখরাজ বা টপাজ।
অর্থাৎ যদি জন্ম ছক অনুযায়ী নির্দিষ্ট গ্রহকে শক্তিশালী করা যায় তা বিভিন্ন বাধা দূর করতে বা সন্তান ধারণ বা সন্তান গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
তবে নির্দিষ্ট গ্রহকে রত্ন ধারণ বা অন্য কোন উপায়ে শক্তিশালী করার আগে অবশ্যই দেখে নেওয়া প্রয়োজন সেই গ্রহটি যেন দ্বিতীয় পঞ্চম ও একাদশ ভাব এর বিপরীত ভাবে সঙ্গে যুক্ত না হয় । বিপরীত ভাব বলতে তার দ্বাদশ ভাব বা আগের ভাবকে বলা হচ্ছে ।অর্থাৎ দ্বিতীয় এর প্রথম , পঞ্চম এর চতুর্থ এবং একাদশের দশম । এখানে সন্তানের যোগ 2, 5 এবং 11 ভাব তৈরি করে মে আবার নিঃসন্তান 1, 4, এবং 10 কে বলা হয়।
বৃহস্পতি ,শুক্র ও চন্দ্র সন্তান কারক গ্রহ হলেও যদি জন্মছকে সেই গ্রহ সন্তান ধারনের বিপরীত ভাব কে নির্দেশ করে তবে বৃহস্পতির জন্য পোখরাজ, শুক্রের জন্য হিরে এবং চন্দ্রের জন্য মুক্ত না ধারণ করাই শ্রেয় বলে মনে হয়। সেক্ষেত্রে বরং রবি ,বুধ ও শনি যে সন্তান ধারকের বিপরীত গ্রহ তারা যদি দ্বিতীয় ,পঞ্চম এবং একাদশ ভাব এর সঙ্গে যুক্ত হয় সে ক্ষেত্রে রবির জন্য চুনী বুধের জন্য পান্না বা শনির জন্য নীলা বা এমিথিস্ট জন্ম ছক বিচার করে ধারণ করা যেতে পারে।
আবার রত্নের সঠিক রং কি হওয়া উচিত এটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অর্থাৎ যে রত্নটি দিয়ে গ্রহটিকে শক্তিশালী বা বাধা দূর করে সন্তানের স্থানটিকে উপযুক্ত করে তুলতে চাইছেন সেই গ্রহটি কার নক্ষত্রে অবস্থিত বা তার রং টি কি সেটি দেখা দরকার। তাই ওই গ্রহের রং বা নক্ষত্রের রঙের সম্মিলিত রং ওই রত্নটির মধ্যে থাকা উচিত তবেই সেটি সঠিকভাবে কাজ দেবে।
এক একটা গ্রহ নয়টি নক্ষত্রে অবস্থিতথেকে অবস্থিত হতে পারে। ধরা যাক বৃহস্পতি গ্রহকে ।বৃহস্পতি গ্রহের রত্ন হিসেবে পোখরাজ কে ব্যবহার করা হয়। এখন বৃহস্পতি বৃহস্পতি গ্রহে অবস্থিত হতে পারে আবার শনি, বুধ, কেতু, শুক্র, রবি, চন্দ্র, মঙ্গল বা রাহুর নক্ষত্রে অবস্থিত হতে পারে ।বৃহস্পতি বৃহস্পতি নক্ষত্রে অবস্থিত হলে রত্নের রঙ হবে পীত পোখরাজ, মঙ্গলের নক্ষত্রের অবস্থিত হলে রত্নের রং হবে লালচে পোখরাজ ।সুতরাং এই ভাবে রত্ন নির্বাচন করে ধারণ করলে রত্নের উপকারিতা অনেক কার্যকরী হবে। সুতরাং রত্ন ধারণ যে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বস্তু তা বলা যেতেই পারে।