কোন দোষে কি প্রতিকার By Best Astrologer in West Bengal
May 24, 2022
কোন দোষে কি প্রতিকার by Best Astrologer in West Bengal
জন্মছকে বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান এ বিভিন্ন যোগের সৃষ্টি হয় ।তার মধ্যে অনেক যোগই শুভ থাকে আবার এর ব্যাতিক্রমও হয় ।এই ব্যতিক্রমে বিভিন্ন অশুভ গ্রহের অবস্থানের ফলে অশুভযোগ তৈরি হয় যা থেকে জাতক-জাতিকার জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। এই অশুভযোগ থেকে বিভিন্ন দোষের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন দোষের মাঙ্গলিক দোষ, গুরুচণ্ডালী দোষ, গ্রহণযোগ , অঙ্গারযোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মাঙ্গলিক দোষ ও তার প্রতিকার
মঙ্গল যদি জন্মছকে লগ্নে, চতুর্থে, সপ্তমে,অষ্টমে বা দ্বাদসে অবস্থান করে তাহলে মাঙ্গলিক দোষ তৈরি হয় ।এর ফলে বৈবাহিক জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে বা একে অপরের থেকে দূরে থাকা অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে আবার এর প্রভাবে আর্থিক ক্ষতি কর্মজীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই যদি মাঙ্গলিক হয় তাহলে অনেকাংশে এই দোষ খন্ডন হয় এবং তারা সুখী জীবনযাপন করে।
হিন্দু শাস্ত্রে কুম্ভ বিবাহের প্রচলন আছে। জাতক বা জাতিকা একজন যদি মাঙ্গলিক হয় সেক্ষেত্রে মাঙ্গলিককে কোন অশ্বস্থ গাছ ,কলা গাছ অথবা রূপোর বা সোনার তৈরি শ্রীবিষ্ণু বা লক্ষ্মীর সহিত বিবাহ দিলে এই অশুভ দোষ খন্ডন হয়।
জন্ম ছকে মঙ্গল এর অবস্থান যদি মেষ রাশিতে হয় তাহলে মাঙ্গলিক দোষ এর প্রভাব অনেকটাই কম হয় যেহেতু মেষ রাশি মঙ্গলের নিজস্ব ক্ষেত্র।
উপবাস – প্রতিকার হিসেবে মঙ্গলবার উপবাস করলে মাঙ্গলিক দোষ এর প্রভাব কমে এইদিন খাদ্য হিসেবে অরহর ডাল গ্রহণ করা যাবে শুধু।
উপাসনা- প্রতি মঙ্গলবার নবগ্রহ মন্ত্র বা মঙ্গল মন্ত্র জপ করা প্রয়োজন সঙ্গে 108 বার গায়ত্রী জপ বা হনুমান চল্লিশা পাঠ করা প্রয়োজন।
মাঙ্গলিক দোষ প্রতিকার এর নবগ্রহ মন্দিরে পুজো দিলে এর কুপ্রভ কমে। ভারতবর্ষের কয়েকটি মন্দিরের মধ্যে তামিলনাড়ু বা গৌহাটিতে এইসব মন্দিরে মঙ্গলবার পুজো দিলে এই প্রভাব কমে। হনুমান মন্দিরে পুজো ও মিষ্টি বিতরণ করে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো দিলে এর প্রভাব কমে।
রত্ন ধারণ- ডান হাতের অনামিকা তে সোনা দিয়ে বাঁধানো উজ্জ্বল লাল প্রবাল ধারণ করা যেতে পারে প্রতিকার হিসেবে। তার আগে অবশ্যই কোন অভিজ্ঞ জ্যোতিষীকে দিয়ে জন্মছক বিচার করে নেয়া প্রয়োজন।
গুরুচণ্ডালী দোষ ও প্রতিকার গুরু
বৃহস্পতি যখন রাহুর সঙ্গে অবস্থান করে অথবা গুলিকার সঙ্গে থাকে বা বৃহস্পতি রাহু দ্বারা বা কেতুর দ্বারা দৃষ্ট হয় তখন এই গুরু চন্ডাল যোগ সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে বৃহস্পতির ক্ষমতা কম থাকলে বা বৃহস্পতি দুর্বল হলেএই দোষের প্রভাব বেশি হয়।
বিভিন্নভাবে ভাবে বা ঘরে গুরুচণ্ডালী দোষ এর প্রভাব ।
লগ্নে – চরিত্র ঠিক থাকেনা আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপর
দ্বিতীয়ে – আর্থিক বিপর্যয় সাংসারিক বা পারিবারিক অশান্তি মানসিক অশান্তি।
তৃতীয় ঘরে খুব সাহসী ও জন্ম থেকে চালকের আসনে, কর্কশ কথাবার্তা, বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব।
চতুর্থে – অপরের দ্বারা অনায়াসে কিছু উপলব্ধি বা পারিবারিক অশান্তি ।
পঞ্চম স্থানে সন্তান হওয়ার সমস্যা বা সন্তানের থেকে সমস্যা।
ষষ্ঠ ঘরে অন্য ধর্ম গ্রহণ করা বা শত্রু বৃদ্ধি ও পারিবারিক সমস্যা। সপ্তমে সাংসারিক জীবনে অশান্তি ব্যবসায় সমস্যা।
অষ্টম ঘরে পথ দুর্ঘটনা ,জীবনের জটিলতা।
নবম ঘরে পিতার সঙ্গে বিতর্ক ,,উচ্চ শিক্ষার সমস্যা। দশম ঘরে মানসিক দৃঢ়তা কম, কর্ম ক্ষেত্রে জটিলতা, সম্মানহানি। একাদশে অসদুপায় আয়, প্রচুর সম্পত্তি অল্প সময়ে কিন্তু হঠাৎ পতন ।
দ্বাদশ ঘরে অদ্ভুতভাবে আধ্যাত্বিক প্রবেশ ।অদ্ভুত চিন্তা ধারা এবং নিজেকে এক আশ্চর্য রূপে অপরের সামনে তুলে ধরা।
গুরুচণ্ডালী দোষ এর প্রতিকার প্রত্যয় যোগ অভ্যাস করা সকালে ও সন্ধ্যায়। শুদ্ধ ও নিরামিষ খাবার গ্রহণ করা ।কুকুরকে নিজে হাতে ভক্ষণ করান। ধর্ম পূজা পাঠ প্রভৃতি তে বিশেষ করে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। গুরু মন্ত্র 108 বার বা বৃহস্পতি জপ করা ।
ওহম ভ্রিম বৃহস্পতএ নমঃ
ওহম ব্রিম বৃহস্পতি নমঃ
ওম শ্রীম ভ্রম বৃহস্পত এ নমঃ
ওহম গ্রম গ্রিম গ্রুম সাহ গুরভে নমঃ।
গ্রহণ দোষ ও তার প্রতিকার গ্রহণ অর্থাৎ অন্ধকার ।রাহু ও কেতু সূর্য মন্ডল এর উপরের ও নিচের দুটি গ্রন্থি। রাহু কেতু যখন রবি বা চন্দ্রের সঙ্গে রাশিচক্রে, জন্ম ছকে অবস্থান করে তখন এই দোষ সৃষ্টি হয় ।গ্রহণ দোষের তাৎপর্য কী। এর জন্য রবি, চন্দ্র, রাহু ও কেতু কে জানতে হবে ।রবি অর্থাৎ পিতা সরকারি জায়গা উচ্চতর স্থান, সম্মান, অহঙ্কার, ক্ষমতা। চন্দ্র অর্থাৎ মা, আবেগ, ঘরবাড়ি, সুখ-স্বাচ্ছন্দ, নিরাপত্তা ইত্যাদি। রাহু অর্থাৎ বিবাদ, আবেগ ,প্রণয়, শিল্পকর্ম, অভিযান ,বিপদজনক কাজ ইত্যাদি ।
কেতু অর্থাৎ মোক্ষ, বিচ্ছেদ আধ্যাত্মিকতা ,সুচতুর অনুমান নীরবতা, রহস্যময়তা ইত্যাদি।
সুতরাং রবি ও চন্দ্র যদি কেতু বা রাহুল সঙ্গে কোন ভাবে যোগ সৃষ্টি করে তবে গ্রহন্ দোষ সৃষ্টি হয়। উপরে জায়গাগুলোকে ক্ষতি করে বা সমস্যা সৃষ্টি করে ।এর প্রাথমিক প্রতিকার নিজেকে সঠিকভাবে চেনা বা উপলব্ধি করা এর মাধ্যমে অনেকটাই নিজের সমস্যা গুলো থেকে বের হওয়া যেতে পারে। গ্রহদের ডিগ্রী কত অবস্থানে এই দোষ এর প্রভাব কমবেশি হয় ।কেতু বিচ্ছেদ নির্দেশ করে সুতরাং জাতকের বেশি করে কোন দায়িত্ব থেকে দূরে থাকা উচিত হতে পারে।
জাতক বা জাতিকা পূর্ব জন্মের কৃতকর্মের ফল বা ঋণ দোষের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় সুতরাং নিজেকে সঠিকভাবে বিবেচনা করে প্রতিটি কর্মে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে ।সত্যকে সামনে রেখে এগিয়ে চলে প্রতিটি ভুল ভ্রান্তি গুলি সামনে থেকে দূরে চলে যাবে ধীরে ধীরে।
অঙ্গার দোষ ও তার প্রতিকার অঙ্গার দোষ তৈরি হয় যখন রাহু এবং মঙ্গল একইসঙ্গে জন্ম কুণ্ডলীতে অবস্থান করে ।এটা কখনও কখনও খুবই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে জাতকের জীবনে। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা এই যোগে বেশ কয়েকজনকে দুর্ঘটনায় জীবন যেতে, পথ দুর্ঘটনার পর হাত-পা ভেঙে বাড়িতে বসে থাকতে দেখেছি। বেশিরভাগ সময় এইসব জাতকের মঙ্গলের দশা চলতে থাকলে বা রাহুর অন্তদশা চলাকালীন এইসব দুর্ঘটনা ঘটে এই সময় শক্তিশালী অঙ্গার দোষ সৃষ্টি হয় যা থেকে জাতক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
এই সময় অভিজ্ঞ জ্যোতিষী তারা জন্মছক বিচার করে কবজ বা সঠিক প্রতিকার করা দরকার হয়। অঙ্গার দোষ থেকে কি কি হতে পারে ।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া ,দীর্ঘস্থায়ী রোগ, চোখের রোগ দশা চলাকালীন হঠাৎ করে ব্যবসার ক্ষতি বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, বিবাহিত জীবনের সমস্যা ,ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার ক্ষতি ,ঔষধ এই সময়ে কাজ না করা ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে ,বদমেজাজি হতে পারে।
অঙ্গার দোষ এর কয়েকটি প্রতিকার
প্রতিকার করার আগে জন্মছকটি ভালো করে বিচার করা দরকার। এখানে রাহু বা মঙ্গল এর প্রতিকার করলে ফল নাও হতে পারে ।শুভ গ্রহ যা জাতক জাতিকার জন্ম ছকে বর্তমান তার প্রতিকার করলে মঙ্গলবার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে ।কখনো কখনো রাহুর শান্তি করলে ভালো ফল পাওয়া যায় ।কিছু শক্তিশালী কবজ এই দোষের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ।
বিশেষভাবে অঙ্গারক শান্তি পুজো করলে মঙ্গলকে শান্ত করা যায় ।অধিপতি গণেশের পুজো করলে এর প্রকোপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
সর্বশেষে আবার বলি কোন অভিজিৎ অভিজ্ঞ জ্যোতিষী দ্বারা জন্মছক বিচার করে সঠিক প্রতিকার করলেই এই দোষের প্রকোপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হতে পারে।